ক্ষমা চাওয়ার শ্রেষ্ঠ দোয়া - ছায়্যিদুল ইস্তিগফার আরবি ও বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ


নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে সায়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, সে যদি সন্ধ্যা হওয়ার আগে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে সায়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, সে যদি সন্ধ্যা হওয়ার আগে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সন্ধ্যায় সায়্যিদুল ইস্তিগফার পড়ে সে যদি সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। -সহিহ বোখারি: ৬৩০৬

সাইয়েদুল ইস্তেগফার আরবি উচ্চারণ:

।اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ-


সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ: 

আল্লা-হুম্মা আনতা রাববী, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, খালাক্বতানী ওয়া আনা ‘আবদুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা, ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী, ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুযুনূবা ইল্লা আনতা।

সাইয়েদুল ইস্তেগফার অর্থ: 

‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’। (১০৫)(১০৫) . বুখারী, মিশকাত হা/২৩৩৫ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘ইস্তিগফার ও তওবা’ অনুচ্ছেদ-৪।


তাওবা, ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। রমাদান মাসে যে আমলগুলো বেশি বেশি করতে বলা হয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম হলো জাহান্নাম বা দোজখ থেকে পরিত্রাণ চাওয়া, জান্নাত বা বেহেশত কামনা করা, ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) করা, দরুদ শরিফ পাঠ করা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ জিকির করতে থাকা।
ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা স্বতন্ত্র একটি ইবাদত, যা আল্লাহ তাআলার খুবই পছন্দনীয়। তাই সব নবী–রাসুল নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও বেশি বেশি ইস্তিগফার করতেন। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবীদের ইমাম ও রাসুলদের সরদার হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকেও ইস্তিগফার করার নির্দেশ দিলেন। (আল–কোরআন, সুরা-১১০ নাছর, আয়াত: ৩)।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আমি দৈনিক সত্তরবার আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করি।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৩০৭)।

পবিত্র কোরআনে ইস্তিগফারের বহু নির্দেশনা রয়েছে। যেমন ‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো; নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।’ (সুরা-৭১ নুহ, আয়াত: ১০)।

‘(হে রাসুল সা.!) আপনি বলুন, হে আমার (আল্লাহর) বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করবেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা-৩৯ জুমার, আয়াত: ৫৩)।

ইস্তিগফার দ্বারা আল্লাহর রহমত ও নেয়ামত লাভ করা যায়। ইস্তিগফারের ফজিলত সম্পর্কে কোরআন করিমে এসেছে, ‘তিনি (আল্লাহ) তোমাদের প্রতি সুষম বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। আর তোমাদের সম্পদে প্রাচুর্য ও সন্তানে বরকত দেবেন এবং তোমাদের জন্য বাগবাগিচা পানির ফোয়ারায় শোভিত করবেন।’ (সুরা-৭১ নুহ, আয়াত: ১১-১২)।

আমরা নিজেরা তাওবা–ইস্তিগফার করব, অনুরূপ সব মোমিন নর-নারীর জন্য ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করব। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মোমিন নর-নারীর বিনিময়ে আমাদের একটি করে নেকি প্রদান করবেন। (মাজমাউয যাওয়ায়িদ, খণ্ড: ১০, পৃষ্ঠা ৩৫২, হাদিস: ১৭৫৯৮)।

Comments

Post a Comment