ওজন বৃদ্ধির কিছু সহজ উপায়!
আমাদের সকলেরই আসলে দেহের ওজনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই জরুরী।😊
অনেক দিন পর আপনাদের জন্য "স্বাস্থ ও সৌন্দর্য" বিষয়ে একটি নতুন আর্টিকেল নিয়ে আসলাম - "ওজন বৃদ্ধির কিছু সহজ ও ঘরোয়া উপায়!"।
স্বাস্থই সকল সুখের মুল।স্বাস্থ ভালো তো মনও ভালো,তাইনাহ?😊
কিন্তু আজকাল অনেকেই অতিরিক্ত মোটা বা স্থুলকায় হবার কারনে বেশ সমস্যায় ভোগছে।আবার অন্যদিকে অনেকেই ভোগছে কম ওজন বা চিকন দেহের কারনে মানসিক ও শারীরিক দুর্বলতায়।
একদিকে বেশি ওজন যেমন সমস্যার কারণ,আবার অন্যদিকে ওজন অনেক কম হওয়াটাও কিন্তু বেশ সমস্যা।😏তাই আমাদের এই দুটো অবস্থা থেকেই বেচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।কারন ওজন বেড়ে গেলে কমানো যেমন কঠিন,তেমনি কম থাকলে সেটা বাড়ানোও বেশ কঠিন।
তবে ওজন কম হবার বেশ কিছু কারন আছে যা আমাদের আগে জানতে হবে।কারন আমরা আমাদের সমস্যার কারন জানলেই কেবল এর সমাধান করতে পারবো।তাই চলুন ওজন কম হওয়ার কারন গুলো কি,তা জেনে নেই।
# ওজন কম হবার সম্ভাব্য কারনসমূহ
- অপর্যাপ্ত ও অনিয়মিত খাবার অভ্যাস
- জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ না খাওয়া
- ব্লেন্ড করে খাবার খাওয়া
- আজে-বাজে খাবার খাওয়ার অভ্যাস
- শারিরীক পরিশ্রম একেবারেই না করা
- অপর্যাপ্ত ঘুম
- মানসিক দুশ্চিন্তা
- ব্যায়াম না করা
- ডায়রিয়া
- জেনেটিক বা জ্বীনগত কারনে
- ক্যান্সার,এইডস অথবা কিডনির সমস্যা ইত্যাদি
কিন্তু বেশি বেশি খাবার খেয়ে কি ওজন বাড়ানো যায়? 😁 না আসলে মোটেও তা না।বেশি বেশি খাবার খেয়ে ওজন বাড়ানো টা শুধু মুখের কথা মাত্র।
আসলে ঠিক যেমন ওজন বাড়াতে সঠিক নিয়ম,ব্যায়াম ইত্যাদি ধাপে ধাপে করতে হয়।ঠিক ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রেও বিভিন্ন নিয়ম কানুন রয়েছে,ব্যায়াম রয়েছে,খাবারের পরিমাণ রয়েছে অর্থাৎ এক্ষেত্রেও আমরা একটা নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন মেনে ধাপে ধাপে আমাদের ওজন বৃদ্ধি করতে পারব।
তা এবার চলুন ওজন বৃদ্ধির উপায়গুলো দেখে নেই 👉
১। বার বার খাবার খাওয়াঃ
আসলে প্রতিটি মানুষেরই উচিত বারবার খাবার খাওয়া অর্থাৎ দিনে দুই ঘন্টা পর পর আপনাকে খাবার খেতে হবে।আর এটি ওজন বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকরী একটি উপায়।তবে যেখানে সাধারন মানুষের দুই ঘন্টা পর পর অল্প করে খাবার খাওয়া উচিত সে ক্ষেত্রে যেহেতু আপনি ওজন বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন তাই আপনি অবশ্যই সাধারণের তুলনায় একটু বেশি পরিমাণে খাবেন।আর চেষ্টা করবেন এই সময়ে দুধ,ফল,ছানা বা সবজি জাতীয় খাবার খাওয়ার।এতে করে আপনার শরীরের পুষ্টির ঘাটতিও কম হবে পাশাপাশি আপনার ওজনও বৃদ্ধি পাবে।
২। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়াঃ
ওজন বৃদ্ধির সহজ উপায়ের মধ্যে এটি অন্যতম।তাই প্রতিদিনকার খাবারে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট রাখার চেষ্টা করবেন।
আর সব বেলায় না হলেও দিনে অন্তত দুইবার কার্বোহাইড্রেট খাবার চেষ্টা করবে। ভাত এবং রুটি হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট এর প্রধান উৎস।😁 তবে তার মানে এই নয় যে বেশি বেশি ভাত-রুটি খাবেন।মানে প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেট পরিমিত এবং সাধারণের তুলনায় একটু বেশি খাবেন।আর আপনাকে অতিরিক্ত ফ্যাট এর দিকেও নজর রাখতে হবে।
আবার আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইডেট তাই আপনি চাইলে ভাত বা রুটির পরিবর্তে আলু খেতে পারেন।তবে ভাত যেহেতু বাঙালির প্রধান খাবার তাই ওই খাবারটা তো আমাদের খাওয়াই হয়।তবে আলুর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে সপ্তাহে ২ দুইবারের বেশি আলু খাবেন না।😎
৩। ব্যায়াম করাঃ
অনেকে মনে করেন শুধু ওজন কমানোর ক্ষেত্রেই ব্যায়াম করা জরুরি।আসলে না,ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে।কারণ ব্যায়াম শরীরের জন্য খুবই উপকারী।ব্যায়াম যেমন আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে ঠিক তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে
তাই হোক ওজন বাড়াতে অথবা কমাতে ব্যায়ামের জুড়ি নেই।তবে এক্ষেত্রে শুধু দৌড়-ঝাঁপ যথেষ্ট নয়।তাই চেষ্টা করবেন নিয়মিত জিমে যাওয়ার।জিমে দক্ষ ট্রেইনারের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যায়াম করার।
৪। টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করাঃ
আজকালকার দিনে টেনশন থেকে মুক্ত থাকা অনেকটাই অসম্ভব ব্যাপার।তবে যতটা সম্ভব চেষ্টা করবেন কম টেনশন করার।কারণ অতিরিক্ত টেনশন আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে খারাপ করে দেয় এবং এতে আপনার ওজন কম হতে পারে।তাই প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ বাইরের আবহাওয়া হাঁটাহাঁটি করা আপনার মনকে উৎফুল্ল করে দিতে পারে।আবার আপনি চাইলে ঘরে বসে ইয়োগাও করতে পারেন।
৫। ঘুমানোঃ
ওজন বৃদ্ধিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রাতের ঘুম এবং বিকেলের ঘুম খুবই কার্যকরী একটি উপায়।কারণ ঘুম আপনার সারাদিনের পরিশ্রান্ত ও ক্লান্ত শরীরে পুনরায় শক্তি ফিরিয়ে আনে এবং এই সময়টায় আপনার শরীরে কোন শক্তি খরচ হয় না।
তাই আপনি ঘুমানোর আগে যদি দুধ-মধু জাতীয় কোন খাবার খেয়ে ঘুমাতে পারেন তাহলে সেই পুষ্টিটুকো সম্পূর্নই আপনার শরীরে খরচ না হয়ে থেকে যায়।আর বিকেলের অন্তত ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা ঘুমাতে পারলে এটি আপনার শরীরের জন্য বেশ উপকারী হবে।তাছাড়া বিকেলের ঘুম শুধু আপনার ওজন বৃদ্ধিতেই নয় বরং আপনাকে রাতে ভালোভাবে ঘুমাতেও সাহায্য করে।
৬। ড্রাই ফ্রুট বা শুকনো ফল খাবেনঃ
আমাদের অতি পরিচিত একটি শুকনো ফলের মধ্যে রয়েছে কিসমিস এবং খেজুর।এই দুটি আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এবং আমাদের প্রায় যে কারো পক্ষেই এই খাবারটা অন্তত সপ্তাহে দুই - তিনবার খাওয়া সম্ভব।
মূলত ড্রাই ফ্রুটস রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি এবং ফ্যাট যা আমাদের ওজন বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।আপনি চাইলে প্রতিদিন রাতে ৮ থেকে ১০ টি কিসমিস এক গ্লাস দুধ অথবা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন।তার পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সেটা খেতে পারেন।এছাড়া আপনি ঘুমানোর আগে শুকনো খেজুর খেয়ে ঘুমালে সেটা আপনার শরীরের জন্যও বেশ উপকারী এমনকি আপনার লিভারের জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।তাই প্রতিদিন এই শুকনো খাবার শুকনো ফল খাওয়ার অভ্যাস টা মোটেও ভুলবেন না।
৭। কলা ও দুধ খাওয়াঃ
কলা যা আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।আমাদের গ্রামে গঞ্জের বাড়িতে অন্য কিছু হোক না হোক দু একটা কলাগাছ তো অবশ্যই পাওয়া যায়।তাই কলার খরচের কথা চিন্তা করতে হবে না আমাদের। আপনি হয়তো জানেন না যে কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। আর এই কলা আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে শক্তি সরবরাহ করতে পারে। আর এ থেকে বোঝা যায় যে টেনিস খেলোয়ার রা বারবার কেন খেলার বিরতিতে কলা খান।তাই নিয়মিত ঘুমানোর পূর্বে একটি কিংবা দুটি কলা খেয়ে নিবেন আর তার পাশাপাশি দুধ খেলে মন্দ হয় না কারণ দুধ হচ্ছে প্রোটিনে ভরপুর।আর যখন ঘুমানোর পূর্বে দুধ এবং কলা একসাথে খাবেন তখন তার সম্পূর্ণ পুষ্টি শরীরে জমা থেকে যাবে যা আপনার ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
৮। ফাস্ট ফুড খাওয়াঃ
এমনিতে সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ দেয় যে বাইরের খাবার কম খাওয়া অর্থাৎ পিজা বার্গার কোলড্রিংস ইত্যাদি হোটেলের ভাজাপোড়া খাবার না খাওয়ার।কিন্তু এক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধির জন্য আপনি ঠিক তার উল্টোটা করবেন অর্থাৎ আপনি বাইরের খাবার যেমন আইসক্রিম কোলড্রিংস ইত্যাদি খেতে পারেন।তবে সেটা অবশ্যই পরিমাণ মতো খাবেন।কারণ অতিরিক্ত জাঙ্কফুড আপনার লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
আশাকরি উপরের এই উপায়গুলো নিয়মিত এবং ধীরে ধীরে পালন করলে আপনি অবশ্যই ভালো ফলাফল লাভ করবেন।তবে সবটাই নির্ভর করে আপনার শারীরিক অবস্থা, আপনার খাবার খাওয়ার পরিমাণ এবং আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উপর।তাই আপনার ওজন বৃদ্ধি না হওয়ার কারণ যদি হয়ে থাকে আপনার জীবনযাত্রা।তাই অবশ্যই সেটা পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন।
good tips
ReplyDelete