আপনিও কি ভাবছেন - ব্লগিং কি? কেনোই বা করবো? ব্লগিং কি আসলেই নাস্তিকতা নাকি ভুল ধারণা?



আমি নওশাদ হোসেন রাহাত  এবং এই পোস্টটি তে আপনাদের জন্যে নিয়ে এসেছি ব্লগিং সম্পর্কীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।


এই পোস্টটি থেকে যা যা শিখবেন

  • ব্লগ কি?
  • ব্লগ ও ওয়েবসাইটের মধ্যে পার্থক্য কি?
  • ব্লগ কতো প্রকার?
  • ব্লগিং কি?
  • ব্লগার কারা?
  • ব্লগিং কেনো করবেন?
  • ব্লগিং কি আসলেই নাস্তিকতা নাকি ভুল ধারণা?

😊 তো চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

ব্লগ কি?



ব্লগিং শব্দটি বেশ পরিচিত হলেও মূলত ব্লগিং সম্পর্কে আমাদের ধারনা টা খুবই সীমিত।তবে এ সম্পর্কে ভুল ধারনা টা খুবই বেশি বলা যায়।আমরা অনেকে আবার এটাও জানি বা শুনেছি যে ব্লগ থেকে নাকি টাকা কামানো যায়।চলুন দেখি আসলেই কি এগুল সত্যি কি না।আর মূলত আজকের আলোচনা টা এই ব্লগিং নিয়েই।তো বন্ধুরা কি এই ব্লগ?


ইন্টারনেটে "ব্লগ" প্রায় ১৫ বছরে পা দিল।

Blog শব্দ টি আবার Weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ।যার আবিষ্কারক হলেন মার্কিন নাগরিন জন বার্জার(১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর)।

পরবর্তীতে Weblog শব্দটিকে ভেংগে দুটি অংশ We আর Blog এ ভাগ করে পিটার মহোলজি নামের এক ব্যক্তি(১৯৯৯ সাল)।তখন থেকেই মুলত ব্লগ এত জনপ্রিয়তা লাভ করে।

ব্লগ মুলত ইংরেজি শব্দ Blog এরই বাংলা রূপ।আর এর অর্থ অনেকটা এই - ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ডায়েরিও বলা চলে।

অর্থাৎ ব্লগ হচ্ছে এমন একটা প্লাটফর্ম যেখানে কোনো ব্যক্তি/গোষ্ঠী/প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব মতামত,বিভিন্ন তথ্য,জিজ্ঞাসা ইত্যাদি ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট ওয়েব পেইজে (Web Page) প্রকাশ করে থাকে।ব্লগে আবার অন্যরা তাদের কমেন্ট বা মন্তব্য প্রকাশ করতে পারে।কিছু কিছু ব্লগে আবার অন্যদের জন্যেও পোস্ট করার সুযোগ থাকে।

# ব্লগ ও ওয়েবসাইটের মধ্যে পার্থক্য কি?

মুলত প্রায় সবাই ব্লগ ও ওয়েবসাইটের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারেনা।আর সাধারনত তেমন বড় কোনো পার্থক্য নেইও।কিন্তু যেই ছোট বিষয়টি ব্লগ ওয়েবসাইট কে আলাদা করে সেটা হলো - ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট গুলো খুবই কম আপডেট হয়।কখনো এক মাস,কয়েক মাস আবার কখনো কয়েক বছরেও তা আপডেট দেয়া হয়না।অর্থাৎ ওয়েবসাইটে কোনো নতুন তথ্য যোগ করা হয় খুব কমই। কিন্তু ব্লগ এর কন্টেন্ট গুলো প্রায় নিয়মিতই আপডেট হয়।কিছু কিছু এমন ব্লগও আছে যেখানে প্রতি মিনিটেও আপডেট হয়।আর আরেকটা বিষয় হলো ওয়েবসাইটের জন্য আপনাকে একটা ডোমেইন অবশ্যই কিনতে হবে এবং হোস্টিং ও কিনতে হবে।কিন্তু ব্লগ এর ক্ষেত্রে এসব না হলেও চলে।


তা কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন এবং কোন কোন প্লাটফর্ম রয়েছে ব্লগিং এর সেই বিষয়ে আমি পরবর্তীতে আলাদা একটা পোস্ট করবো আপনাদের জন্য।

# ব্লগ এর প্রকারভেদসমূহ

বর্তমানে অনেক ধরণের ব্লগিং রয়েছে।এদের মধ্যে থেকে কিছু আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।


  • ব্যক্তিগত ব্লগ (Personal Blog)
  • প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ (Institutional Blog)
  • সংবাদপত্র ব্লগ (News Blog)
  • নিশ/বিষয়ভিত্তিক ব্লগ (Niche Blog)

# ব্যক্তিগত ব্লগ

এসব ব্লগ মুলত কোনো একজন ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।অর্থাৎ এসব ব্লগে নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি তার মতামত,জ্ঞান,প্রশ্নোত্তর ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করে।এই ধরনের ব্লগ ব্যক্তির পছন্দের বিষয় নিয়েই হয়ে থাকে।

# প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ

এসব ব্লগ সাধারনত কোনো কোম্পানি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের ক্লায়েন্ট বা শিক্ষার্থীদের কাছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য,বিজ্ঞাপন,সেল অফার,বিভিন্ন প্রোডাক্টসের রিভিউ বা দাম ইত্যাদি বিষয় নিয়েই লেখা হয়ে থাকে।

# সংবাদপত্র ব্লগ

এই ধরনের ব্লগে সাধারণত সাম্প্রতিক কালের বিভিন্ন খবরাখবর নিয়ে লেখালেখি করা হয়।এটাও মুলত এক প্রকারেত অনলাইন নিউজ পেপার।তবে এই ধরনের ব্লগ ব্যক্তিগতও হয়(যদি সাংবাদিক হয়), তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো কোনো সংবাদমাধ্যম এরই হয়ে থাকে।এদের মধ্যে কিচগু আবার শুধু অনলাইনেই খবর প্রকাশ করে।

যেমন প্রথম আলোর নিজস্ব ব্লগ আছে,ডেইলি স্টার এর আছে ইত্যাদি।

# নিশ ব্লগ

নামটা বেশ আজব মনে হচ্ছে তাইনা?

বিষয়টা খুবই সহজ।কারন এই ব্লগটাই বিষয়ভিত্তিক ব্লগ।অর্থাৎ যেকোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে লেখালেখি হয় এই Niche Blog এ।যেমন শুধু খাবার নিয়ে একটা ব্লগ অথবা ফ্যাশন নিয়ে একটা ব্লগ।মানে মাত্র একটা বিষয় নিয়েই লেখা হয় এধরণের ব্লগে।

# ব্লগিং কি এবং ব্লগার কারা?

আশা করি ব্লগ কি সেটা বুঝাতে পেরেছি আর আপনারাও আশা করি বুঝতে পেরেছেন।তো এবার আসি ব্লগিং এ।





মুলত ব্লগে লেখালেখি করাটাই ব্লগিং।আর যারা এই লেখালেখি করে তারাই ব্লগার নামে পরিচিত।সে আমিও হতে পারি কিংবা আপনিও।ব্লগে লেখা হলো কথা।


# ব্লগিং কেনো করবো?

বর্তমানে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে ছোট বড় বিভিন্ন পেশার মানুষ এই ব্লগিং এর সাথে কম বেশি জড়িত।কেউ বা শখের বসে আবার কেউ পার্ট টাইম আয়ের উৎস হিসেবে আবার অনেকে মুল উপার্জনের উৎস হিসেবেও এই ব্লগিং কে একটা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।তো এক্ষেত্রেও এটা সম্পুর্ণ আপনার উপরই নির্ভর করছে যে আপনি কোনটা বেছে নেবেন।কেউ কেউ ইন্টারনেটে  নিজের পরিচিতি গড়ে তুলতেও ব্লগিং করে থাকেন।মুলত ব্লগিং দিয়ে এগুলোতো করা যায়ই তার পাশাপাশি আরো অনেক কিছুই আপনি চাইলে করতে পারবেন।যেমন ধরুন যদি আপনার কোনো শপ বা ছোট দোকান থাকে যা স্থানীয়ভাবে বেশ পরিচিত কিন্তু আপনি চাচ্ছেন যে এটা আরও দুরের মানুষের কাছে পৌছে দিতে।এটাও আপনি ব্লগ এর দ্বারা করতে পারবেন।আর এটা করতে টাকারও প্রয়োজন হয়না।তবে যদিও আপনি চাইলে অধিক সুবিধার জন্য টাকা খরচ করেও ব্লগিং করতে পারেন।তো ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন এই বিষয়ে আনি আপনাদের পরবর্তী পোস্টে জানানোর চেষ্টা করবো।


# ব্লগিং সম্পর্কীয় ভুল ধারণা

শুনেছি বলেছিলাম যে ব্লগিং সম্পর্কে আমাদের ধারণা টা কম হলেও ভুল ধারণা তাহলে বেশি। এতক্ষণ আপনারা ব্লগিং কি? ব্লগিং কেন করবেন? কিভাবে করবেন? ব্লগ কত প্রকার? এ সম্পর্কে অনেক কিছুই পড়লেন,জানলেন। আশা করি বুঝাতে পেরেছি এবং আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তো চলুন এখন আমরা জানি যে ব্লগিং সম্পর্কে ভুল ধারণা গুলো আমাদের দেশে রয়েছে যেমন,ইতোমধ্যে ব্লগিংকে নাস্তিকতা বলা হয়েছে।আবার মানুষ ব্লগিং শব্দটা,ব্লগার শব্দটা শুনলেই কেনো জানিনা একটু অন্যরকমভাবে ন্যায়।চলুন আসলেই কি বিষয়গুলো সত্য কিনা তা দেখে নেই। আপনারা প্রথমেই পড়েছেন যে মূলত কোন একটা ওয়েব পেজে ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান,কোন সংবাদমাধ্যম কোন নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে বা তাদের মতামত,জ্ঞান ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করাটাই ব্লগিং। ব্লগার তার নিজের ইচ্ছেমত লেখালেখি করতে পারবে।এটা অন্য কেউ নির্ধারণ করে দেওয়ার মত নেই।যেমন আপনি লিখতে পারেন শিক্ষার বিষয় নিয়ে,লিখতে পারেন টেকনোলজি নিয়ে,লিখতে পারেন বিভিন্ন ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে,লিখতে পারেন মার্কেটিং সম্বন্ধে, আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট রিভিউ দিতে পারেন।তো সম্পূর্ণই আপনার উপর নির্ভর করবে যে আপনি কি লিখবেন আপনার ব্লগে।সুতরাং এটা বলা যায় যে যদি কোন নাস্তিক তার ব্লগে ধর্ম সম্বন্ধে কটুক্তি করা বা নাস্তিকতা বা খারাপ খারাপ কথা বলা,ধর্ম-অধর্ম,বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সংঘর্ষ লাগানো এসব লেখালেখি করে,তো তাই বলে যে একটা প্লাটফর্ম খারাপ হয়ে যাবে অর্থাৎ ব্লগিংটা খারাপ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে তা তো না।কারণ যেমন আমরা ফেসবুক ইউজ করি,তো ফেসবুকে অনেক ভালো কিছুর পরেও দেখবেন বিভিন্ন খারাপ জিনিস পাওয়া যায় যেমন - ধর্ম সম্বন্ধে কিন্তু ওখানে কটুক্তি করা হচ্ছে,বিভিন্ন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে,বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কে নিয়ে কটুক্তি করা হয়,কোন একটা বিষয়কে খারাপ করে দেখানো হয়,বিভিন্ন দলের মধ্যে সংঘর্ষ লাগানো ইত্যাদি।কিন্তু তারপরেও কি Facebook কে খারাপ বলে বন্ধ করেছে।বরংচ বর্তমানে ফেইসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা অগণিত হারে বাড়ছে। তো আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে ব্লগিং সম্পর্কে ভুল ধারণা গুলো কেন এবং এগুলোর যে আসলেই কোনো ভিত্তি সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।আর আশা করি আপনাদের ব্লগার হওয়া,ব্লগ কি,ব্লগিং করা এসব সম্পর্কে বেশ ভালো ভাবে বোঝাতে পেরেছি।


ব্লগ সম্পর্কে আরো জান্তে চাইলে উইকিপিডিয়ার লিংকটি তে গিয়ে পড়তে পারেন 😊⬇

ব্লগ - উইকিপিডিয়া

তো বন্ধু,যদি পোস্টটি পড়ে ভাল লেগে থাকে এবং এর থেকে কিছু শিখতে পারেন,কিছু জানতে পারেন,বুঝতে পারেন তাহলে পোস্টটি শেয়ার করার মাধ্যমে অন্যদের কাছেও আমার লেখালেখি গুলো পৌঁছে দিতে সাহায্য করুন।

Comments

Post a Comment