ডিজিটাল মার্কেটিং কি? | What is Digital Marleting in Bangla?



আজকের এই টিউটরিয়াল পোস্টে আমি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।আশা করি খুব মনোযোগ সহকারে আপনি এই পোস্টটা পড়বেন।কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং কোন কঠিন বিষয় নয় এটা খুবই সহজ,বোঝাটাও সহজ।কিন্তু এই পোষ্টের প্রত্যেকটা পয়েন্ট মনোযোগ দিয়ে পড়বেন,কারণ এখানে প্রতিটা পয়েন্টই আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সম্পর্কে কিছু না কিছু তথ্য দিতে থাকবে।তাই আশা করি পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।তো চলুন শুরু করা যাক।😊
এর আগে এক নজরে দেখে নিন ➤

এই পোস্টটি থেকে যা যা শিখবেন

  • ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
  • ডিজিটাল মার্কেটিং ও প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কি?
  • ডিজিটাল মার্কেটিং কেনো করবেন বা এর লাভ কি?
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এর চ্যানেল বা ভাগসমূহ কি কি?
  • ডিজিটাল মার্কেটিং করতে কি টাকা লাগে?
তো আজকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। কারণ যুগের সাথে সাথে সাথে আপনি যদি আধুনিকতা,আধুনিক প্রযুক্তি এবং আধুনিক মার্কেটিং ব্যবস্থার সাথে পরিচিত না হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন।তাই চলুন জেনে নেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর সহজ কনসেপ্ট/বিষয়গুলো।ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিষয় গুলো একটু কঠিন মনে হলেও এতটা কঠিন না।যদিও মনে হচ্ছে যে বিষয়টা একটু কারিগরি সম্পন্ন বা টেকনিক্যাল বিষয়,আমাকে অনেক কিছু জানতে হবে এর জন্য,অনেক টাকা পয়সা লাগতে পারে,বড় বড় কম্পিউটার লাগবে বা লোক লাগবে কাজ করার জন্য এরকম কিছুই না।😊
আশা করি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন পোস্টটা।তাহোলে খুব সহজেই এই সম্পর্কে যথেষ্ট শিখতে ও বুঝতে পারবেন।তো চলুন শুরু করা যাক।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?


ইংরেজি Digital শব্দটির দ্বারা এখানে আধুনিক প্রযুক্তিকে বুঝানো হয়েছে।আর Marketing এর দ্বারা প্রচার করাকে বোঝানো হয়েছে।

অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে ⇨ ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি সমূহের ব্যবহার করে আপনার ব্র্যান্ডের/ব্যবসার ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ড বা ব্যবসার পরিচিতি বাড়ানো এবং পাশাপাশি আপনার দেয়া পণ্যদ্রব্য গুলো কাংখিত গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা।

Also Read


ডিজিটাল মার্কেটিং কে কিন্তু অনলাইন মার্কেটিংও বলা হয়।কারণ যেহেতু আপনি পুরো মার্কেটিং এর কাজটা অনলাইনেই করতেছেন।অনলাইনে ছাড়া কিন্তু এই কাজটা সম্ভব না।তাই একে অনলাইন মার্কেটিং ও বলা হয়।

কি ভাবছেন? যে এক কথার সঙ্গে এত বড় হয়ে গেল।
হ্যাঁ,সংজ্ঞাটা বড় হতে পারে কিন্তু বিষয়টা খুবই সহজ।আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে ডিজিটাল মার্কেটিং কি।এবার চলুন দেখি ডিজিটাল মার্কেটিং এবং প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবসার মধ্যে পার্থক্য কি।


ডিজিটাল মার্কেটিং ও প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থার পার্থক্য

একটা জিনিস আমরা সবাই জানি যে বর্তমান যুগ আধুনিক প্রযুক্তির যুগ।এমনকি আমরা ছোট ছোট ক্লাসের বাংলা রচনা বই গুলোতেও দেখে থাকি যে বর্তমান যুগ নাকি আধুনিক প্রযুক্তির যুগ তাই না?😊
হ্যা,সত্যই।
বর্তমানে প্রযুক্তির উপস্থিতি সবক্ষেত্রেই উপলব্ধি করা যায়।যেমন আপনি নিজেই এখন হাতে ফোন অথবা ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারের সামনে বসে পোস্টটি পড়তেছেন।😁

আমাদের প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে,আর পাশাপাশি উন্নত হয়েছে প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থাও।আগে যেখানে মার্কেটিং করা হতো মুখে মুখে,লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে অথবা বিশাল বড় করে কোন সাইনবোর্ড বানিয়ে যেখানে লোকের ভিড় অনেক,যেখানে মানুষের নজর পরে বেশি এমন জায়গায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে।⬇


টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে,রেডিওতে বিজ্ঞাপন করিয়ে,এমনকি অনেক সময় টাকা দিয়ে এমপ্লয়ি অথবা কর্মচারী রেখেও কিন্তু মার্কেটিং করা হতো,আর সে ক্ষেত্রে খরচের কথাটা আশা করি বুঝতেই পারছেন যে কি পরিমান খরচ করতে হতো।কারন একটা বড় সাইনবোর্ড বানানো,টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখানো রেডিওতে বিজ্ঞাপন দেয়া অথবা টাকা দিয়ে লোক রাখা,এটা যে কোনো ছোটখাটো খরচের বিষয় নয় সেটা আশা করি বুঝতে পেরেছেন।😁


আর সকলের পক্ষে যে এত খরচ করে বিজ্ঞাপন দেওয়া টিভিতে,রেডিওতে অথবা সাইনবোর্ডে সম্ভব হবে তাও কিন্তু না।সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থা যা পূর্ব হতে আজ পর্যন্ত চলে আসছে তাতে খরচের পরিমাণ যেমন বেশি তেমন পরিশ্রমও অনেক বেশি।আর এটাও বুঝতেই পারছেন যে অল্প সময়ে এত কিছু করাও সম্ভব না। আর এক্ষেত্রে মার্কেটিং করতে গেলে যদি আপনি কর্মচারী হন,যে আপনি অন্য কোন কোম্পানির/ব্র্যান্ডের মার্কেটিং করে দেবেনসে ক্ষেত্রে আপনাকে নিশ্চয়ই প্রতিদিন সকালে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠতে হবে,রেডি হয়ে অফিসে যেতে হবে।
তারপর কাজ শুরু করতে হবে আবার নির্দিষ্ট একটা সময় আপনাকে বাড়ি ফিরতে হবে।
আর এর ভিতর হয়তো আপনি আটটা-দশটা যা পারলেন মার্কেটিং করলেন,প্রোডাক্ট বিক্রি করলেন।মাস শেষে কিন্তু আপনার হাতে কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাই আসলো।তো সবশেষে লাভ কি হলো? এত খরচ এত সময় ব্যয় করার পরেও মুনাফা কিন্তু খুবই কম।
কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ দেখুন আপনি ঘরে বসে,দোকানে বসে বা যেকোনো জায়গায় আপনার হাতে যদি মোবাইল ফোন থাকে,ল্যাপটপ থাকে অথবা কম্পিউটার থাকে এবং ইন্টারনেটের ব্যবস্থা থাকে আপনি যখন খুশি,যেভাবে খুশি মার্কেটিং করতে পারবেন।এর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কোন অফিসে বসতে হচ্ছেনা,নির্দিষ্ট কোন দোকান দিয়ে বসতে হচ্ছে না এমনকি নির্দিষ্ট কোন সময় কাজটা শুরুও করতে হচ্ছে না।বরং আপনার জন্য সব সময় কাজ করার সুযোগ রয়েছে আবার সব সময়ই ছুটি।আপনি কাজ কখন করবেন,মার্কেটিং কখন করবেন সেটা সম্পূর্ণই আপনার হাতের মুঠোয়।


ডিজিটাল মের্কেটিং কেনো করবেন বা এর লাভ কি?

বর্তমানে ২০১৭ সালের জরিপ অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রায় সর্বমোট ৭৫৩ (7.53 billion) কোটির মত মানুষ রয়েছে।আর যেখানে ২০১৫ সালের ইন্টারনেশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন এর হিসাব অনুযায়ী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩৩২ (3.32 billion) কোটির সমান অর্থাৎ প্রায় পৃথিবীর অর্ধেক মানুষই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে অর্থাৎ অনলাইনে তাদের আনাগোনা রয়েছে। আর বর্তমানে স্মার্টফোন প্রযুক্তির প্রসার লাভের পর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেরটি কমিশন এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯.০০৫ কোটির মতো। তাহলে আশাকরি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে আপনার সামনে কি পরিমান সম্ভাব্য কাস্টমার রয়েছে বা ক্লায়েন্ট রয়েছে যার কাছে আপনি আপনার পণ্য বা সার্ভিস (Products/Sevicres) বিক্রি করতে পারবেন,আপনার ব্র্যান্ড আওয়ারনেস (Brand Awareness) বাড়াতে পারবেন অথবা প্রতিষ্ঠান,ব্যবসার পরিচিতি বৃদ্ধি করতে পারবেন।আর এটাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ বা সুবিধা।কারণ একমাত্র ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই আপনি সারাবিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ ইন্টারনেটে রয়েছে তাদের সামনে আপনি আপনার ব্যবসা/ব্র্যান্ড/পণ্য বা সার্ভিস এর পরিচিতি এবং তা বিক্রি করার মাধ্যমে বা তা প্রদান করার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা মুক্ত।


সাধারণত প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থায় আপনি সর্বোচ্চ একটা দেশের ভেতর আপনার ব্যবসার প্রসার লাভ করাতে পারবেন।আর যদি দেশের বাইরে প্রসার করাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ওই দেশগুলোতে আপনার একটা প্রতিষ্ঠানে থাকতে  হবে যার মাধ্যমে আপনি অন্য দেশেও আপনার ব্যবসার প্রসার লাভ করাতে পারেন/সার্ভিস প্রদান করতে পারেন এবং মুনাফা অর্জন করতে পারেন।কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনি ঘরে বসেই অথবা আপনি যেখানে খুশি শুধু ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট সংযুক্তির মাধ্যমে আপনার পণ্য/সার্ভিস বিক্রি করে,তার প্রচার-প্রসার বাড়িয়ে মুনাফা অর্জন করতে পারছেন।আর কে আছে যে এত বড় সুযোগ হাতছাড়া করে দিবে। আর আপনিও নিশ্চয়ই আপনার ব্যবসা প্রসারের এত বড় সম্ভাবনাটা হাতছাড়া করতে চাইবেন না।কি ঠিক বললাম তো?


ডিজিটাল মার্কেটিং এর চ্যানেল বা ভাগসমূহ

ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে অনেকগুলো  চ্যানেলের সমন্বয়ে বা কিছু মার্কেটিং ভাগ এর সমন্বয়ে গঠিত সম্পূর্ণ একটা মার্কেটিং ব্যবস্থা।নিচে আমি ওই চ্যানেলগুলোর একটা তালিকা দিলাম।

  • সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO)
  • ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং
  • সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)
  • ই-মেইল মার্কেটিং
  • মোবাইল মার্কেটিং
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য বাস সার্ভিসের প্রচারণার কাজটি সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে করতে পারেন।এক্ষেত্রে আপনি সার্চ ইঞ্জিন কে  আপনার এড দেখানোর জন্য  টাকা দেবেন  এবং তারপর যখন কেউ সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে কোন কিছু সার্চ করবে যা আপনার দেয়া পণ্য বা সার্ভিস এর সাথে মিল রাখে বা সামঞ্জস্যপূর্ণ তখন ওই সার্চ রেজাল্টের পেজটা আসবে এবং ওই পেজের উপরের দিকে আপনার এডভার্টাইজ গুলো সার্চ ইঞ্জিন দেখাবে।অর্থাৎ আপনি একটা এড দিলেন,আমি একটা দিলাম এরকম সর্বোচ্চ আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত এডভারটাইজ একটা সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টের পেজে দেখানো হয়।তবে এক্ষেত্রে কার রেজাল্ট উপরে আসবে সেটা নির্ভর করে তার দেয়া পণ্য বা সার্ভিসের সামঞ্জস্যতার উপর।তবে এই সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং ব্যবস্থার মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর ব্যাপক অ্যাওয়ারনেস/পরিচিতি এমনকি মুনাফা বৃদ্ধি করতে পারবেন। যখন আপনার এড সার্চইঞ্জিনে দেখানো হবে তখন আপনার এড এর উপর বাম পাশে কোনার দিকে ছোট করে Ad লেখা থাকবে।

তবে এই সুবিধাগুলো আপনি শুধু সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে পাবেন।আর আপনার এড গুলো তখনই শো করা হবে অর্থাৎ দেখানো হবে যখন কেউ আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনকিছু সার্চইঞ্জিনে খুজবে। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় একটা সুবিধা হল আপনি আপনার পণ্য বা সার্ভিস শুধু সেই ব্যক্তিদেরই দেখাতে পারবেন যাদের আপনি দেখাতে চাচ্ছেন।একে বলা হয় টার্গেটেড কাস্টমার


সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO)

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগকে কোন সার্চ ইঞ্জিনে অ্যাড করবেন যাতে ওই সার্চ ইঞ্জিন গুলো আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের যে কনটেন্ট গুলো রয়েছে তা তাদের সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টের পেজে দেখাতে পারে,যখন কেউ তাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনকিছু সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজে।আর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও করার জন্য আপনাকে কোন টাকা খরচ করতে হবে না অর্থাৎ এই কথাটা দ্বারা জোর দেওয়া হয়েছে যে এসইও (SEO) করতে বিন্দুমাত্র টাকা আপনার খরচ করতে হবে না।সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টের পেজে যে অ্যাড গুলো দেখানো হয় সেগুলো ব্যতীত প্রত্যেকটা রেজাল্টই এসইও (SEO) এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন আমাদের দেখায়।এছাড়া এসইও ছাড়া আপনি কখনোই আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের কনটেন্ট গুলো সার্চইঞ্জিনে দেখাতে পারবেন না।যদি দেখাতে চান তাহলে আপনাকে এসিএম (SEM) করতে হবে।

ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং

ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং এর সাথে আমরা অনেকেই কমবেশি পরিচিত বলতে পারি।তবে অনেকেই হয়তো দেখলেও বুঝতে পারেনি যে আসলে এটা কি ডিসপ্লে এডভারটাইজিং কিনা।ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং হল এমন একটি এডভারটাইজিং ব্যবস্থা যার মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্যের বা সার্ভিসের প্রচারণার কাজটি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের কোন ফোটো ব্যানার,এনিমেশন,শর্ট ভিডিও বানিয়ে সেই সকল ওয়েবসাইটে দেখাতে পারবেন যারা তাদের ওয়েবসাইটে আপনার এড দেখাবে।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে নিজে কোন কাজ করতে হবে না।এই অ্যাডগুলো আপনি শুধু ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং নেটওয়ার্কে আপলোড করে সেট করে দেবেন তারপর ওই ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং নেটওয়ার্ক নিজেই সেই সকল ওয়েবসাইটে আপনার এড দেখাতে থাকবে যেই ওয়েবসাইটগুলো এই নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত এবং এই অ্যাড শুধু তাদেরই দেখানো হবে যাদেরকে আপনি দেখাতে চান এবং ততক্ষণই দেখাবেন যতক্ষণ আপনি এডভার্টাইজিং নেটওয়ার্কে টাকা দেবেন।ডিসপ্লে এডভারটাইজিং বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ জনপ্রিয় এডভার্টাইজিং ব্যবস্থা।কারণ এতে আপনি রিচ মিডিয়া (Rich Media) ব্যবহার করে অর্থাৎ Photo,Video,Animatipn ব্যবহার করে আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর প্রচারণা করতে পারবেন। আপনি অনেক সময় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গেলে দেখতে পাবেন উপরের দিকে এটা শাঁটারের মত অ্যাড দেখানো হয় ইত্যাদি।মূলত এই সকল এডভার্টাইজ গুলো ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং এর মাধ্যমে দেখানো হয়।তো বুঝতেই পারছেন ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং কেন এত জনপ্রিয়।


মোবাইল মার্কেটিং

বিভিন্ন এন্ড্রয়েড ফোনের অ্যাপস ব্যবহার করলে দেখা যায় যে একটু পর পর বিভিন্ন এডভার্টাইজ দেখানো হয়,নিচের দিকে ছোট করে এডভার্টাইজ দেখানো হয়,উপরের দিকে শাটারের মতো এড দেখানো হয়।এগুলো অনেকটা ডিসপ্লে এডভার্টাইজের মতোই।তবে এগুলোকে এন্ড্রয়েডের জন্য আলাদা ভাবে ম্যানেজ করতে হয়।এটাই মোবাইল মার্কেটিং।


সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)


নামটা শুনে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি।হ্যাঁ বন্ধু ঠিক ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে যে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট গুলো রয়েছে সেগুলোতে আপনার ব্র্যান্ড এর পরিচিতি বৃদ্ধি করা,অ্যাডভার্টাইজ দেখানো,কনটেন্ট প্রমোট করা ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করে বা প্রদান করে মুনাফা অর্জন করা।
বর্তমান বিশ্বে ফেসবুক,হোয়াটসঅ্যাপ,মেসেঞ্জার এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় সর্বমোট ২৮০ কোটি এবং বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৫ মিলিয়ন ২৫০ লক্ষ।আর যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুককে তাদের সংবাদ মাধ্যমের প্রথম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ওই দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৫ শতাংশ লোক।

তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে শুধু ফেসবুক নেটওয়ার্ক(Facebook,Messenger,WhatsApp,Instagram এই সবগুলো ফেসবুকের অংশ) এর মধ্যেই এত লোক রয়েছে।অনলাইনে তাহলে আরো যে সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলো রয়েছে তাতে নিশ্চয়ই আরো অনেক সম্ভাব্য কাস্টমার রয়েছে আপনার।সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এবং ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং এর পরে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর দ্বিতীয় বৃহত্তম চ্যানেল মার্কেটিং ব্যবস্থা। তবে ফেইসবুক মারকেটিং অথবা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ আপনি সাধারণত যেভাবে পোস্ট করেন ঠিক সেভাবে ও বিনামূল্যে আপনার কনটেন্ট,প্রডাক্ট বা সার্ভিস কে প্রমোট করতে পারবেন।তবে এক্ষেত্রে আপনি আপনার এই অ্যাডভার্টাইজ গুলো ঠিক আপনি যাদের চাচ্ছেন তাদের নির্দিষ্ট করে দেখাতে পারবেন না বরং সবাই এই এডভেটাইজ টা দেখবে।কিন্তু যদি আপনি টাকা দিয়ে এডভার্টাইজ দেখান তাহলে আপনি শুধু আপনার প্রোডাক্টের জন্য বা আপনার সার্ভিস এর জন্য নির্দিষ্ট যে কাস্টমার গুলো রয়েছে ঠিক তাদেরই আপনার এডভার্টাইজ দেখাতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটা সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাডভার্টাইজ পলিসি/নিয়ম আলাদা আলাদা।আর সোশ্যাল মিডিয়া এডভার্টাইজিং ও ফ্রি এবং পেইড দুটোই রয়েছে।


ই-মেইল মার্কেটিং


Source : optinmonster

ই-মেইল মারকেটিং বেশ জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং ব্যবস্থা।এই মার্কেটিং ব্যবস্থায় আপনি যাদের আপনার ব্র‍্যান্ড,প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে প্রচারণা করবেন তাদের প্রায় ৯৯.৯৯% লোকই আপনার কাসটমার হয়ে গেছে বলতে পারেন। ইমেইল মার্কেটিং আমরা অনেকেই জানি অনেকেই জানিনা।তবে আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এমনকি সাধারণত ইউটিউবে ও যদি যাই তাহলে দেখতে পারবো যে সাবস্ক্রাইব নামে একটা বাটন রয়েছে।যেখানে সবাই তাদের ভিডিওতে বলে যে ক্লিক করুন,সাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করে আমাদের সাথে থাকুন এবং নতুন নতুন আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করুন।তো মূলত এই সাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করলে ওনাদের কাছে আমাদের ইমেইলটা সেভ হয়।আবার আমরা যখন কোন ওয়েব সাইটে সাবস্ক্রাইব করি বা কোন ব্লগে সাবস্ক্রাইব করি তখন আমাদের ইমেইল একাউন্ট টা দেওয়া হয়। আর আমরা নিশ্চয়ই শুধুমাত্র ওই ব্লগ/ওয়েবসাইট/ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করি যাদের কন্টেন্ট/প্রডাক্ট বা সার্ভিস আমাদের দরকার আছে বা আমরা কিনব। আর সাবস্ক্রাইব করার পর থেকেই আমরা তাদের কাছ থেকে তাদের বিভিন্ন অফার বা বিভিন্ন আপডেট সম্পর্কে ইমেইল পেতে থাকি এবং যদি আমাদের তাদের কোনো পণ্য ভালো লাগে তখন আমরা কিনে থাকি অথবা ভিডিও হলে তা দেখি অথবা কোন আর্টিকেল হলে তা পড়ি মূলত এটাই হচ্ছে ইমেইল মার্কেটিং।যে আপনি আপনার কাস্টমারের ইমেইল গুলো সংগ্রহ করবেন এবং উনাদেরকে আপনার নতুন নতুন কনটেন্ট ভিডিও আর্টিকেল বা অফার সম্পর্কে আপডেট জানাবেন এবং তা থেকে ওনারা আপনাকে কনভার্সন দেবে অর্থাৎ কোন জিনিস কিনলে এটা আপনার জন্য কনভার্সন,ভিডিও হলে দেখল এটাও কনভার্শন,আর্টিকেল পড়ল এটা কনভার্সন।এভাবে আপনি যথেষ্ট মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
আর এতা আপনি Free এবং Paid দুটোই পাবেন।


কন্টেন্ট মার্কেটিং

মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল বিষয়টিi হচ্ছে কনটেন্ট অর্থাৎ সম্পূর্ণ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আমরা কনটেন্ট নিয়েই কাজ করি।এখন কনটেন্ট বিভিন্ন রকমের হতে পারে যেমন ওয়েবপেজ,ব্লগ-পোস্ট,ইউটিউব ভিডিও,এমনিতেই কোনো ভিডিও,পডকাস্ট,স্লাইড,পিডিএফ,ই-বুক,কোন ফটো ইত্যাদি সবই কনটেন্ট।আর এই কনটেন্ট নিয়ে প্রচারণা করা,ব্র্যান্ড পরিচিতি বৃদ্ধি করা,প্রোডাক্ট এর প্রমোট করা,বিক্রি করা,সার্ভিস প্রদান করা এগুলোকেই মূলত কনটেন্ট মার্কেটিং বলা হয়।


এফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টা হচ্ছে তিনটা জিনিস এর সাথে জড়িত।
  1. প্রথমতঃ অ্যাডভারটাইজার/মার্চেন্ট
  2. দ্বিতীয়তঃ এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক
  3. তৃতীয়তঃ পাবলিশার
এক্ষেত্রে অ্যাডভারটাইজার বা মার্চেন্ট তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রোমোটের জন্য বিভিন্ন ব্যানার,এনিমেশন,লিংক ইত্যাদি অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে  রেখে দেয়।পরবর্তীতে কোন পাবলিশার ওই অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক এর সাথে পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়ে সেখান থেকে অ্যাডভারটাইজার বা মার্চেন্ট দের দেয়া ব্যানার বা অ্যানিমেশন বা লিংক গুলো নিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইট বা ব্লগে প্রমোট করে।পরে যখন কেউ পাবলিশারদের প্রমোট করা লিংক/ব্যানার/ইমেজ এ ক্লিক করে অ্যাডভারটাইজার দের কোন পণ্য বা সার্ভিস ক্রয় করে তখন পাবলিশার কমিশন পায়।এক্ষেত্রে আলাদা আলাদা অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক আলাদা আলাদা নিয়মকানুন ও কমিশন দেয়। তবে পাবলিশার কি কোন টাকা খরচ করতে হয় না বরং সে টাকা আয়।করে কিন্তু অ্যাডভার্টাইজার বা মার্চেন্ট তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেয়ার জন্যে এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক (Affiliate Network) কে টাকা দিলে পরে সেখান থেকে পাবলিশার টাকা পায়।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে টাকা লাগে কি?

প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থার তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় তাকে খরচ হয়মা বললেও চলে অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনার টাকা খুবই অল্প পরিমাণে খরচ হবে।
যেমন ধরেন গুগলের সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ে আপনি মাত্র 50 টাকায় 1000 জন কেউ আপনার এডভারটাইজ দেখাতে পারবেন(ক্ষেত্র বিশেষে)।তাছাড়া প্রত্যেকটা চ্যানেলেই আপনাকে ফ্রিতে মার্কেটিং করার সুযোগ দেবে।তবে আপনার যখন অধিক সুবিধা দরকার হবে তখন আপনি চাইলে টাকা দিয়ে মার্কেটিং করতে পারবেন।যেমন আপনি চাচ্ছেন যে শুধু টার্গেটেড কাস্টমারদের আপনার এডভার্টাইজ দেখাবেন সে ক্ষেত্রে আপনার টাকা খরচ করতে হবে।তো মুলত প্রচলিতমার্কেটিং এর তুলনায় খরচটা খুবই যৎসামান্য।

যাইহোক আজকের পোস্টটিতে আশা করি আপনাke বুঝাতে পেরেছি যে - 

  • ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
  • কেন করবেন?
  • এর সাথে প্রচলিত মার্কেটিং এর পার্থক্য কি?
  • ডিজিটাল মার্কেটিং এর চ্যানেল সমূহ কি কি?
তো আজকে এই পর্যন্তই।আমি পরবর্তীতে আমার পরবর্তী পোস্টগুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই চ্যানেলগুলোর প্রত্যেকটির জন্য আলাদা আলাদা আর্টিকেল তৈরি করব এবং প্রত্যেকটির খুঁটিনাটি বিশদভাবে আলোচনা করে আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করব।ইনশা আল্লাহ।

ভালো থাকবেন,দোয়া করবেন।😊😊😊

আর যদি পোস্টটি থেকে আপনি অল্প কিছুও জানতে পেরে থাকেন ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে তবে নিশ্চয়ঈ এটি সেয়ার করে আমাকে সাপোর্ট দেবেন আশা করি।😊

আপনি চাইলে আমার এই পোস্টগুলো পড়ে দেখতে পারেন।পোস্ট পড়তে ছবিতে ক্লিক করুন।⬇

Comments

  1. Thanks so much for giving such a beautiful post

    ReplyDelete

Post a Comment